পর্ব____৪

(পর্ব-৪)

************************************

বেভারলি হিলস নিজেই এক স্বপ্নময় শহর। প্রশস্ত, পরিষ্কার রাস্তা, রোলস রয়েস বা ল্যাম্বোর্গিনির মতো বিলাসবহুল গাড়ির গর্জন, চারপাশে প্রসাধনসজ্জায় রুচিশীল সব ভিলা ও বাংলো। এখানকার প্রতিটি কোণ যেন একেকটি সিনেমার দৃশ্যের মতো নীরব, এলিট, অথচ স্বপ্নময়।

পাম গাছের সারি, গোলাপি আকাশের সূর্যাস্ত, আর চারদিকে পাহাড়ের আলতো সবুজাভ রেখা বেভারলি হিলসকে করে তুলেছে প্রকৃতি আর আধুনিক বিলাসের অপূর্ব মিশেল।

"এরিকের সানরাইজ ম্যানশনটি বেভারলি হিলসের এক উঁচু পাহাড়ি চূড়ায় অবস্থিত, যেখানে সকালের রোদ ঝিলমিল করে পড়ে চকচকে সাদা মার্বেল কাঠামোর ওপর।

এরিকের রোলস-রয়েস, বিশাল ফটকের মধ্য দিয়ে ঢুকলেই চোখে পড়ে মনোরম সবুজ লনে ছাওয়া রাস্তা, যার দুই পাশে লেবু, জলপাই ও পামগাছ সারি বেঁধে দাঁড়িয়ে আছে। বাড়ির সামনে একটি ঝর্ণাধারা গড়িয়ে পড়ছে মার্বেল পাথরের ফোয়ারায়।

তিনতলা বিশাল এই ম্যানশনে রয়েছে কাঁচের দেয়াল, যা দিয়ে পাহাড়, আকাশ আর লস অ্যাঞ্জেলেস শহরের আলোঝলমলে রাত দেখা যায়। অভ্যন্তরে আছে লাইব্রেরি, হোম থিয়েটার, সুইমিং পুল আর আধুনিক প্রযুক্তিতে গড়া একটি সুরক্ষিত আন্ডারগ্রাউন্ড গ্যারেজ।

এরিক রোলস-রয়েসের দরজায় ধাক্কা মেরে বেরিয়ে এল, চোখে তার আগুন জ্বলছে । সে দ্রুত পা ফেলে জিম রুমের দিকে এগিয়ে গেল-এ মুহূর্তে তার রাগের আগুন থামাতে দরকার কেবল শক্ত একটা পাঞ্চিং ব্যাগ, যেন সে মুঠির ঘায়ে সব ক্ষোভ ঝেড়ে ফেলে শান্তি খুঁজে পায়।

মেডরা তার পিছু পিছু আসতে নিলে এরিক রেগে বলে উঠলো,

"Don't f*c*king bother me."

এরিকের রাগী মুখ দেখে মেডরা ভয়ে নিঃশব্দে দাঁড়িয়ে রইলো-এই বিশাল ম্যানশনের প্রতিটা মানুষ জানে, এরিকের রাগ মানে ঝড়ের আগমনী সংকেত।

তার উপস্থিতিতেই যেন বাতাস ভারী হয়ে ওঠে, কেউই সাহস পায় না তার সামনে শব্দ করার-সবাই চুপচাপ, আতঙ্কে গুটিয়ে থাকে, কারণ একবার এরিকের রাগের আগুন জ্বলে উঠলে, পুরো বাড়িটাই থমথমে হয়ে যায়।

এরিক জিম রুমের দরজাটা প্রচণ্ড শব্দে বন্ধ করল, পা টিপে টিপে এগিয়ে গেল পাঞ্চিং ব্যাগের দিকে। হাতের ঘড়িটা মেঝেতে ছুঁড়ে ফেলে, শার্টটা ছিঁড়ে খুলে ফেলল-তারপর খালি হাতে পাঞ্চিং ব্যাগে একের পর এক ঘুষি মারতে লাগল, যেন প্রতিটা ঘায়ে ইনায়ার সেই থাপ্পড়ের দৃশ্যটা আরও জ্বলন্ত হয়ে উঠছে চোখে, রাগের আগুনে নিজেকে পুড়িয়ে দিচ্ছে।

এরিকের মুষ্টি যখন আরেকটা আঘাতের জন্য পাঞ্চিং ব্যাগের দিকে ওঠে, ঠিক তখনই অলিভিয়া তার হাত চেপে ধরে ফিসফিসিয়ে বলে,

“বেইবি, তুমি কী করছো? ওই সামান্য মেয়েটার জন্য নিজেকে এভাবে কষ্ট দিচ্ছো কেন?”

অলিভিয়ার কথাগুলোতে ঘরের ভারী, উত্তপ্ত বাতাসে এক ঝলক শীতলতার স্পর্শ এনে দিল। এরিকের রাগ, যেন একটা জ্বলন্ত অগ্নিকুণ্ড, সামান্য হলেও ঠান্ডা হলো। তার কপালের রেখাগুলো কিছুটা শিথিল হলো, চোখের কোণে জমে থাকা ক্রোধ একটু যেন পাতলা হলো। ইউ আর রাইট অলিভিয়া আমি কেন শুধু শুধু নিজেকে কষ্ট দিচ্ছি।

আমি তো তাকে কষ্ট দিব যে আমার গায়ে হাত তোলার সাহস দেখিয়েছে। আজ পর্যন্ত কেউ এই এরিক অ্যাসফোর্ডের গায়ে হাত তুলা তো দূরের কথা চোখে চোখ রেখে কোনদিন কথা বলে নি। আর ওই মেয়ের এতো সাহস,

“I'll make her life hell, I swear.”

অলিভিয়া এরিকের দিকে এগিয়ে এসে নিজের এক হাত এরিকের গালে স্পর্শ করে বলল,

“We'll make her life hell.

"তুমি শুধু দেখতে থাকো বেইবি, আমি ওই মেয়ের কী হাল করি?অলিভিয়ার কথাগুলো শুনে এরিক পাগলের মতো হাসতে হাসতে সোফায় গিয়ে বসলো এবং অলিভিয়াকে ইশারা করে বললো,

"কাম ডার্লিং সিট অন মাই ল্যাপ। "

অলিভিয়া এরিকের কাছাকাছি আসতেই, এরিক অলিভিয়াকে কোলে বসিয়ে, তার কোমরে হাত রেখে কাছে টেনে নেয়।

তারপর ধীরে ধীরে ঠোঁট ছুঁইয়ে দেয় অলিভিয়ার গোলাপি ঠোঁটে-প্রথমে নরম, তারপর গভীর, যেন সময় থেমে যায়, নিঃশ্বাস গুলিয়ে আসে, চারপাশের সব শব্দ মিলিয়ে যায় শুধু হৃদস্পন্দনের গুঞ্জনে।

অলিভিয়ার আঙুল চুলে জড়িয়ে যায়, চোখ দুটো ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে আসে, ঠোঁটের উষ্ণতায় দুজনেই হারিয়ে যায় এক অদ্ভুত মুগ্ধতায়।

চলবে.....

Download

Like this story? Download the app to keep your reading history.
Download

Bonus

New users downloading the APP can read 10 episodes for free

Receive
NovelToon
Step Into A Different WORLD!
Download NovelToon APP on App Store and Google Play