Unhealthy Obsession [Part.1]
.................................................
জায়ান ক্রীতিক চৌধুরী (JK) 🖤
[Jayan Kritik (JK)]
মেহরীন অরোরা শেখ (অরু) 🩷
[Aurora Sheikh (Aru)]
.................................................
ভালোবাসা একটি চার অক্ষরের বিশাল অর্থবহ তাজা অনুভূতির রাজ্য। এ অনূভুতি কে কখনো কখনো বিশ্লেষণ করে হাজারটা রূপ দান করা যায়। প্রেম, প্রনয়, মোহ, ঘোর, আসক্তি আরও কত কিই, আবার কারও কারও কাছে এটি "সঙ্গিন প্রনয়াসক্তি" বা [Unhealthy Obsession]
ভালোবাসার বিশ্লেষণ যেমন সবার কাছে এক নয়, তেমনই সবার ভালোবাসার ধরনটাও ঠিক একরকম নয়। কিছু মানুষের ভালোবাসা সদ্য ফোটা ভৃঙ্গরাজ পুষ্পের ন্যায় আকর্ষনীয় আর সুরভীত। তাদের হৃদয়ের আদ্যপান্ত মিলনে ইষার্ন্বিত হয়ে কত প্রশংসাই না করে মানুষ।
অন্যদিকে এই পুষ্পরেণুর মতো ভালোবাসার বিপরীতে যে শুধুই ঘৃনার বসবাস তেমনটা নয়, ওই যে বললাম ভালোবাসারও ধরন হয়। কেউ কেউ এসব গঁদবাধা ভালোবাসার নিয়মে গা ভাসাতে পারেনা কোনো কালেই, খালি মুখে ভালোবাসি কথাটা উচ্চারন করাটাও যেন হিমালয় জয় করার মতো এডভেঞ্চারাস আর থ্রিলিং তাদের কাছে, তাই সেসব কিন্তু ওয়ালা মানুষগুলোর ভালোবাসা প্রকাশের ধরনটাও হয় কিছুটা ভিন্নরকম, সেখানে অনুভূতি প্রকাশের থেকে আদায়করার স্পৃহাটাই বেশি কাজ করে। সেই আদায় করার ধরনটা যেমনই হোক, জোর করে কিংবা তার থেকেও কোন কুৎসিত পন্থায় (At any cost).
কারও কাছে সে ভালোবাসা বিষাক্ত তো কারও কাছে অসুস্থ। কারও মতে এ আবার কেমন ভালোবাসা, এটা কোনো কালেই ভালোবাসা নয়, নিছকই আসক্তি, ভয়ানক আসক্তি। আবার ইঁচড়েপাকা, dark romance দেখে দেখে foreign culture এ বেড়ে ওঠা অষ্টাদশীদের কাছে it's called dangerous love.
এতো এতো বিশ্লেষণ আর চর্চার বাইরে গিয়ে আরও একধরণের অনুভূতি রয়েছে, এটা অনেকটা একপাক্ষিক ভালোবাসা (Onesided love). হৃদয়ের সুপ্ত অনুভূতির কথা তাকে না জানিয়েও কি সুন্দর দিনরাত অতিবাহিত করে দেওয়া যায় তাকে কল্পনায় ভালোবেসে। একটিবার চোখের দেখা দেখেও নরম হৃদয়টা পুলকিত হয়ে ওঠে মূহুর্তেই।
.................................................
ঘুমের ঘোর এখনো কাটেনি, চারিদিকের পরিবেশ পরিস্থিতি বুঝে উঠতে একটু সময় লেগে গেলো ওর, যখন বুঝে উঠলো তখন প্রতিদিনের মতো master bed এর king size বিছানায় নিজেকে আবিস্কার করলো Arú. ঠোঁট কামড়ে একটা চাঁপা নিঃশ্বাস ছেড়ে ধীরে সুস্থে সময় নিয়ে নিজের হাটু অবধি লম্বা silky চুল গুলোকে messy bun করে বিছানা ছাড়লো ও, তারপর সবার আগে বন্ধ করলো বিরক্তিকর alarm clock.
একে একে পুরাতন জানালার ভারী পর্দা গুলো সরিয়ে রুমটাকে আলোকিত করে বসে পরলো ল্যাপটপ নিয়ে, তারপর সেই বিরক্তিকর কাজ mail পাঠানো। গত একবছর ধরে এটা ওর রুটিনে রূপান্তরিত হয়েছে, আবারও ভেতরের আহত বাতাসকে নিঃশ্বাসের মাধ্যমে নিংড়ে বের করলো Arú.
𝗙𝗘𝗠𝗔𝗟𝗘 𝗟𝗘𝗔𝗗
আপা যে কেন বুঝতে চায়না কে জানে?
Mail পাঠানো শেষ হলে, শক্ত কাঠের চেয়ারটায় গা এলিয়ে দিয়ে উদাসীন চোখে বাইরে চাইলো অরু, ওর পড়নে কোন দামি pajama set নয়, বরং simple প্লাজো আর একটা oversized t-shirt, সাধারন বাঙালি মেয়েরা যা পরে ঘুমায় আর কি, এই রুমের বিশাল জানালার কারুকাজ করা লৌহ গাট গলিয়ে যতদূর চোখ যায় শুধু বাগানবিলাশের ছড়াছড়ি, এখন বসন্ত চলছে তাই একটু বেশিই সুন্দর লাগছে বাড়ির front yard টা।
পুরান ঢাকায় যতগুলো প্রাচীন আর নাম করা বাড়ি আছে তার মধ্যে এই বাড়িটা অন্যতম। লোকমুখে শোনা যায় এ বাড়ির পূর্ব পুরুষরা নায়েব-গোমস্তা ছিলেন। পরবর্তী প্রজন্মে জমিদারি প্রথা বিলুপ্ত হয়ে গেলেও এদের বংশপরম্পরায় নেতৃত্ব আর আভিজাত্য ভাবটা রয়েই যায়, তাইতো যুগের পর যুগ, প্রজন্মের পর প্রজন্ম সবাই রাজনৈতিক কর্নধার হয়ে নাম লিখিয়ে এসেছেন। এই বাড়িটা ঠিক কোন প্রজন্মের জানা নেই অরুর তবে বাড়িটা বেশ পুরোনো। প্রায় দশ বিঘা জমি নিয়ে তৈরি এ বাড়িটাকে ছোট খাটো dream holiday বললে মন্দ কিছু হবেনা।
মহলের সদর দরজা থেকে গেইট অবধি যেতে মিনিট দশেক টাইম লেগে যায়, ধীরে সুস্থে হাটলে তার চেয়েও বেশি। তারপর চোখে পরে অযত্নে ইতি-উতি বেড়ে ওঠা বাগান বিলাসে ঘেড়া দানবাকৃতির বিশাল গেইট। তাতে মার্বেল পাথর দিয়ে গুটিগুটি অক্ষরে লেখা "ক্রীতিক কুঞ্জ"।
বছর ত্রিশেক আগেও বাড়ির নাম কিংবা গেইটের চেহারায় ভিন্নতা ছিল, কিন্তু ত্রিশ বছর আগে এ বাড়ির ছোট কর্তার জন্মের পরই তার দাদাসাহেব এক মাত্র আদরের নাতির নামে বাড়ির নাম পরিবর্তন করেন। ইট পাথর আর লোহায় ঘেরা গেইটকে সর্বেসর্বা বিদায় জানিয়ে মার্বেল পাথরের গেইট নির্মান করেন, বাড়ির নাম পরিবর্তন করে রাখেন "ক্রীতিক কুঞ্জ"।
সময় পাল্টেছে, সময়ের তালে তালে বদলে গেছে কতৃত্ব আর আভিজাত্যে মোড়ানো মানুষ গুলোও। একে একে খালি হয়েছে ক্রীতিক কুঞ্জ। তাদের দাম্ভিকতা কিংবা রাজনৈতিক অবদান এখন কেবলই লোক মুখের বুলি মাত্র। এতো কিছু বাদ দিলেও real-estate business নিয়ে এ পরিবার এগিয়েছে অনেক দূরে, দেশ ছাপিয়ে বিদেশে সগৌরবে দাপিয়ে বেড়ায় এদের পারিবারিক business. সবাই এক নামে চেনে, দেশিয় পন্যের 30% জোগান এদের পারিবারিক ব্যাবসা থেকেই আসে, শুধু উচ্চ পদস্থ না, সয়ং সরকারও আজকাল মুখে লাগাম দিয়ে কথা বলে এদের সাথে।
𝗙𝗘𝗠𝗔𝗟𝗘 𝗟𝗘𝗔𝗗
Unfortunately, এই পরিবারের শুধু টাকাই আছে পরিবার বলে কিছু নেই ৷
আপসোসের সুরে বলে ওঠে Arú. তখনই নিচ তলা থেকে অনুর রাশভারী কন্ঠস্বর শোনা গেলো ৷
অনু
Arú, এই Arú এর বাচ্চা খেতে নাম, আমি কি এখন পালকি নিয়ে আসবো? হসপিটালে যেতে দেরি হলে তোর খবর আছে।
শুনেই বোঝা যাচ্ছে বেজায় চটে আছে সে। Arú দ্রুত চেয়ার ছেড়ে দেওয়াল ঘড়িতে চোখ রাখলো, নয়টা বেজে পয়ত্রিশ ৷
𝗙𝗘𝗠𝗔𝗟𝗘 𝗟𝗘𝗔𝗗
এই রে, হাবিজাবি ভাবতে ভাবতে সময় শেষ করে ফেলেছি, তারউপর আজ আবার ভার্সিটিতে যাওয়ার Plan আছে, নিচে গেলে আপা নির্ঘাত কথা শুনিয়ে পেট ভরিয়ে ফেলবে, এখন কি করি?
▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎
■...At The Dining Table...■
অনু খাবার serve করতে করতেই ready হয়ে নিচে নামে Arú, পরনে সেটে আছে tops আর skirt, হাতে পুঁথি দিয়ে তৈরি বানজারা bag.
অনু
এতোক্ষণে আসার সময় হলো তোর? রুমে দরজা আটকে কি করিস এতো? তোর জন্য আমার হসপিটালে যেতে কতটা দেরি হয়ে গেলো দেখলি?
𝗙𝗘𝗠𝗔𝗟𝗘 𝗟𝗘𝗔𝗗
Ready হচ্ছিলাম আপা।
অনু
প্রতিদিনই তোর ready হতে late হয়? আর ready কেন হয়েছিস? কতবার বলেছি versity তে যাওয়ার দরকার নেই, আমি একা এতো কিছু সামলাতে পারছি না হাঁপিয়ে উঠেছি আমি।
নিঃশ্বাসের পাল্লা ভারী হয় অনুর। অনুর হাজারটা অভিযোগেও অরু নিশ্চুপ।
𝗙𝗘𝗠𝗔𝗟𝗘 𝗟𝗘𝗔𝗗
মা এখন কেমন আছে আপা?
অনু
সেটা নিজে গিয়েই বরং দেখে আয়।
𝗙𝗘𝗠𝗔𝗟𝗘 𝗟𝗘𝗔𝗗
আমার দেখতে ভালো লাগেনা আপা, বড্ড কষ্ট হয় মাকে এভাবে নিথর হয়ে শুয়ে থাকতে দেখতে, হসপিটালের dettol আর hexisol এর গন্ধে দম বন্ধ হয়ে আসে আমার। শ্বাস নিতে পারিনা আমি।
Arú এর কথায় অনু আড়ালে নিঃশ্বাস ছাড়ে, মায়ের অসুখের পর থেকে ওর ডান পিঠে দুরন্ত বোনটা নিজেকে অনেক সামলেছে, যে মেয়ে সারাদিন হুরোহুরি আর বান্ধবীদের নিয়ে মেতে থাকতো সেই মেয়ে ঘরকুনো হয়েছে, হাজারটা অহেতুক বায়না ধরা মেয়েটা প্রয়োজনের বাইরে গিয়ে এখন আর একটা কথাও বলেনা। Arú এর মতো মুক্ত বাতাসে ডানাঝাপটানো মেয়ের জন্য এই পরিবর্তন অনেক কিছু ৷
Arú এর বয়স কম সবে উনিশে পা দিয়েছে, তাইতো অনু নিজেই ওকে এসব হসপিটালের ঝুটঝামেলা থেকে দুরে সরিয়ে রাখে, আবার নিয়তির সাথে পেরে না উঠে নিজেই বিরক্ত হয়ে যায় বারবার, সে বিরক্তি নিজের মধ্যে আটকে রাখা কষ্টকর হয়ে ওঠে ওর জন্য, গুমরে মরা অশান্ত হৃদয়টাকে একটু হালকা করার দায়ে মাঝেমধ্যেই বহিঃপ্রকাশ ঘটে চড়াও মেজাজের, যার ভুক্তভোগী হয় ওর ছোট্ট বোনটা।
অনু নিজেকে বহুবার বুঝিয়েছে আর যাই হোক ছোট বোনের ওপর রাগ ঝাড়বে না, কিন্তু দিন শেষে, মায়ের অসুখ, বাড়ি হসপিটাল-হসপিটাল বাড়ি এই করতে করতে নিজের খেইর নিজেই হারিয়েছে।
𝗙𝗘𝗠𝗔𝗟𝗘 𝗟𝗘𝗔𝗗
আপা আমি গেলাম, আগামী একসপ্তাহ কোথাও যাবোনা, রান্না বান্না সব আমি করবো তবুও প্লিজ রাগ করিস না তুই।
অনুর অযাচিত ডাকে পেছনে ঘুরলো Arú। অনু কি বলবে সেটা বোধ হয় Arú জানতো, তাই এগিয়ে এসে বললো...
𝗙𝗘𝗠𝗔𝗟𝗘 𝗟𝗘𝗔𝗗
Email পাঠিয়ে দিয়েছি।
𝗙𝗘𝗠𝗔𝗟𝗘 𝗟𝗘𝗔𝗗
আপা তুইও না, গত এক বছর ধরে একটানা email পাঠানোর পরেও যেখান থেকে একটা reply আসেনি, হুট করেই সেখান থেকে reply চলে আসবে? এতোটাও বেশি আসা করিস না।
কথা শেষ করে গট গট পা ফেলে বেরিয়ে যায় Arú. Arú চলে যাওয়ার পরে অনু আনমনে বলে,
অনু
আমার বিশ্বাস Arú কোনো একদিন ঠিক রিপ্লে আসবে, আর আমরা মাকে সুচিকিৎসার জন্য বিদেশেও নিয়ে যাবো। যেদিন মা আবারও সুস্থ হয়ে ফিরবে, তোর আর আমার দুঃখ সেদিনই ঘুচবে।
▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎
পুরো নাম, মেহরীন Aurorá Shéikh. এই বছরই versity তে admission হয়েছে ওর। তবে নতুন নতুন বড় হয়ে যাওয়া, versity এর আনন্দ, কিংবা বন্ধুমহল কোনো কিছুই ছুতে পারেনি ওকে, কারন একটাই মায়ের হার্টের অসুখ। আগে তাও হেটে চলে আসতে পারতো কিন্তু গত একবছর ধরে হসপিটালের এক কামরার বেডে শুয়ে দিনাতিপাত করে ওর মা আজমেরী শেখ। মায়ের দিনরাত দেখভাল করতে হয় বলে বড় বোন মেহবীন শেখ অনন্যা HSC এর পরেই পড়াশোনার ইতি টেনেছে।
Arú জানে ওর বড় আপা এতো রগচটা কোনোকালেই ছিলনা, গত একবছর ধরেই এমন হুটহাট রেগে যায় আপা, আর এও জানে পরিবারের জন্য আপার কত বিষর্জন, এমনটা নয় যে অনু বয়সে Arú এর থেকে খুব বড়, পিঠেপিঠি বোন ওরা দুজন, তবুও অনুর কত ত্যাগ। তাইতো আপার রাগের মাথায় বলা সবচেয়ে তিক্ত কথাগুলোকেও গায়ে মাখেনা Arú. Arú এর উদাসীন ভাবনার ইতি টেনে রিকশা এসো পৌঁছালো গন্তব্যে।
■.At Jagannath University.■
Versity এর গেটে দাঁড়িয়ে লম্বা করে শ্বাস নেয় Arú, এই একমাত্র যায়গা যেখানে এসে একটু প্রানভরে সস্থির নিঃশ্বাস নিতে পারে Arú. সেই সাথে সস্থিদায়ক মানুষটার একটিবার দেখা মিললে তো আর কথায়ই নেই। যাকে নিয়ে ও রোজ স্বপ্ন দেখে, সুন্দর সপ্ন। Arú জানে নিখিল ভাইয়ের সাথে commitment কিংবা মুখ ফুটে দুটো কথাবলার সাহস ও ওর নেই। তার উপর নিখিল ভাই versity এর senior, graduation ও এবছর শেষ তার।তবুও বেহায়া মনটা মানে না।
𝗙𝗘𝗠𝗔𝗟𝗘 𝗟𝗘𝗔𝗗
কবে যে নিখিল ভাই নিজে এসে বলবে, Arú শোনো, আমি ও তোমাকে পছন্দ করি।
নীলিমা
সেই আশায় সেগুড়ে বালি।
পেছনে নীলিমার কাঠকাঠ প্রতিউত্তর শুনে Arú এর হাসিহাসি দাঁত কপাটি বন্ধ হয়ে গেলো।
𝗙𝗘𝗠𝗔𝗟𝗘 𝗟𝗘𝗔𝗗
তুই আমার মনের কথা শুনলি কি করে?
নীলিমা
যেই tone এ বলছিলি, আমি কেন রিকশা ওয়ালা মামারাও শুনেছে আমি sure.
𝗙𝗘𝗠𝗔𝗟𝗘 𝗟𝗘𝗔𝗗
আফসোস শুধু নিখিল ভাই শুনলো না।
নীলিমা
কি করে শুনবে? তুইতো তাকে দেখলেই চোরের মতো যথাতথা লুকিয়ে পরিস।
𝗙𝗘𝗠𝗔𝗟𝗘 𝗟𝗘𝗔𝗗
তা ঠিক চল ভেতরে যাই।
গেট পেরিয়ে ক্যাম্পাসে যেতে যেতে নীলিমা বলে,
নীলিমা
আন্টির কি খবর? এখন কেমন আছেন?1
𝗙𝗘𝗠𝗔𝗟𝗘 𝗟𝗘𝗔𝗗
একই রকম। আজকেও আপার বকুনি খেয়ে এসেছি।
নীলিমা
তোর ভাইয়ার company থেকে email এসেছিল?
কথাটা বলতে একটু অসস্থি হলো নীলিমার, কারণ সব ব্যাপারে মুখ খুললেও এই ব্যাপারটা সবসময়ই এরিয়ে যায় Arú, খুব বেশি হলে হুম হা করে উত্তর দেয়। এবারও তাই হলো, এদিক ওদিক মাথা নাড়িয়ে না জবাব দিলো Arú।
নীলিমার রাগ হলো কেন যেন, যদিও ব্যাপারটা সম্পূর্ণ Arú এর ব্যক্তিগত তবুও এ কেমন ছেলে? মায়ের খোজ নেয়না, even কোনোরকম যোগাযোগ নেই পর্যন্ত। আজকালকার যুগে email এ কেউ যোগাযোগ করে? নীলিমা রাগ সংবরণ করতে না পেরে বলেই ফেললো,
নীলিমা
কেমন ভাই তোর মাকে এভাবে দেশে ফেলে রেখে নিজে বিদেশে পরে আছে?
Arú মেকি হাসলো, হুট করেই নীলিমার রাগের কারন ধরতে পারলো না, তবুও নরম সুরে বললো,
𝗙𝗘𝗠𝗔𝗟𝗘 𝗟𝗘𝗔𝗗
He is not my sibling.
নীলিমা
তাহলে? Step brother, মানে আঙ্কেলের দ্বিতীয় স্ত্রীর ছেলে তাইতো?
𝗙𝗘𝗠𝗔𝗟𝗘 𝗟𝗘𝗔𝗗
নাহ তেমন কিছুও নয়।
নীলিমা
তাহলে কেমন ভাই তোর?
নীলিমার কথার পেছনে Arú কিছু বলতেই যাবে তার আগেই ওদের মাঝে তিথি চলে আসে। আর Jayan Kritiķ নিয়ে চলমান রহস্যময় conversation এর ওখানেই ইতি ঘটে।
নীলিমা
কিরে এভাবে ছুটে এলি কেন? কিছু হয়েছে?
Arú ও প্রশ্নসূচক দৃষ্টিতে চেয়ে আছে। Arú এর versity join করার পরে পুরো বাংলা department এর মধ্যে এই দুটোই বন্ধু জুটেছে ওর, তার মধ্যে ওই introvert, নীলিমা যাও মোটামুটি একটু চুপচাপ থাকে, কিন্তু তিথী মোটেই চুপচাপ স্বভাবের মেয়ে নয়, versity এর সব থেকে গড়ম খবরটা ওর কাছ থেকেই পায়,হোক সেটা gossip কিংবা কোনো important news. এছাড়া department এর অন্য batch mate দের সাথে Arú এর মুখ চেনাচিনি আছে কিনা সন্দেহ, কিভাবেই বা থাকবে versity জীবন নড়বড়ে ওর, attendance এর জন্যও পর্যন্ত versity আসতে দেয়না অনু, তবুও আপার বকুনি ঝকুনি খেয়ে মাসের মধ্যে দু'একটাবার পা রাখে versity এর চত্বরে। যদিও সেটা পড়াশোনার জন্য নয়,বরং পছন্দের শ্যাম পুরুষকে একটা নজর দেখার আশায়, সবার আড়ালে তার মুখখানা হৃদমাঝারে করে নিলেই শান্তি ওর।
তিথি
ওহ, হ্যা তোর কাছেই আসছিলাম Arú, কাল versity তে কেন এলিনা বলতো? তাহলেই তো সব জানতে পারতি।
𝗙𝗘𝗠𝗔𝗟𝗘 𝗟𝗘𝗔𝗗
কি হয়েছে একটু খুলে বল? তাছাড়া কেন আসিনি সেটাতো তুই জানিসই, তাহলে নতুন করে কেন প্রশ্ন করছিস তিথি?
তিথি
কাল নিখিল ভাইদের সমাবর্তন অনুষ্ঠান ছিল নিখিল ভাই সেরা ছাত্রত্বের পুরষ্কার পেয়েছে।
তিথি
তারপর আরও একটা ঘোষণা হয়, আমি পরে সিনিয়রদের থেকে জেনেছি যে, নিখিল ভাই masters করবে না, উনি higher studies এর জন্য scholarship পেয়েছে, খুব শীঘ্রই তিনি USA চলে যাবে।
Arú চমকায় না, কোনো রকম প্রতিক্রিয়াও করেনা, অসস্থির লেস মাত্র নেই ওর মুখশ্রীতে। খুশি থাকার একমাত্র কারনটা হারিয়ে যাচ্ছে ও কি আদোও ঠিক আছে? ওর ভেতরে যে অস্থির ঝড়োহাওয়া শুরু হয়ে গেছে, মনে হচ্ছে হৃদয়টা শক্ত করে খাঁমচে ধরেছে কেউ, গলাটা শুকনো কাঠে পরিনত হয়েছে, তবুও থমথমে মুখে ছোট্ট করে Arú জবাব দেয়,
এটুকু শব্দ উচ্চারণে Arú এর অগ্নিস্ফুলিংঙ্গ উগরে দেওয়ার মতো কষ্ট হলো। তবুও বান্ধবীদের সামনে মুখের মিথ্যে হাসিটা ঠিকই ধরে রাখলো, কারণ আর যাই হোক একপাক্ষিক ভালোবাসা কিংবা আধুনিক শব্দে বলতে গেলে crush কে হারানোর জন্য কান্নাকাটি করে ভাসিয়ে দেওয়া কিংবা সবাইকে বলে বলে sympathy কুড়ানোর মতো আত্মসম্মানহীন মেয়ে Arú নয়।
এমনিতেই ওর মায়ের অসুস্থতা নিয়ে অনেকেই করুনা দেখাতে আসে, যা ওর শরীরে জ্বলন ধরিয়ে দেয়, Arú এর করুনা মোটেই পছন্দ নয়, তবে নিজ অধিকারের ক্ষেত্রে সর্বদা সতর্ক ও। যা ওর সেটা ওরই। কিন্তু নিখিল ভাই? সে তো ওর নয়, কোনো কালে ছিলোও না। ওই কেবল একতরফা ভালোবেসে গিয়েছে, নিখিল ভাইতো ওকে ছোট বোন ছাড়া কিছুই ভাবেনা, শুধু ওকে কেন ছাত্র নেতা হিসেবে সব junior মেয়েরাই তার ছোটো বোনের সমতুল্য, Arú আলাদা করে তো কিছুই নয়।
তিথি
Campus এর দিকে দেখ নিখল ভাই আসছে।
তিথির কথায় Arú এর দিবাস্বপ্নে ভাটি পরে, তরিৎ গতিতে ভাবনার জগৎ থেকে বাস্তবে বেরিয়ে দেখতে পায় campus থেকে গেইটের দিকেই এগিয়ে আসছে নিখিল ভাই, কালো ডেনিমের সাথে নীল পাঞ্জাবীতে কি সুন্দর লাগছে তাকে, কাধে ঝুলে আছে ল্যাপটপের ব্যাগ, কানে headphone.
তিথি
কি এতো গান শোনেন উনি?
কাঠফাটা রোদে উজ্জ্বল শ্যামলা চেহারাটা জলজল করছে তার, মুখে লেগে আছে সেই সুন্দর হাসিটা। Arú চোখ বন্ধ করে বলতে পারে এই innocent দেখতে ছেলেটার প্রেমে পরে যাওয়া কোন মেয়ের জন্য চুটকির ব্যাপার মাত্র।
নিখিল ওদের সামনে আসতেই সবাই একযোগে সালাম দিলো তাকে, senior বলে কথা। সালামের জবাব দিতে নিখিল ও একটু থামলো, সামনে না গিয়ে ওদের দিকে কয়েক কদম এগিয়ে আসলো। নিখিল ওদের দিকে আসছে দেখে Arú নীলিমার পেছনে গিয়ে গুটিশুটি হয়ে দাড়ালো।
নিখিল ভাইয়ের আকষ্মিক সম্মোধনে ধরা পরে যাওয়া চোরের ন্যায় হুরমুর করে সামনে তাকায় Arú. হ্যা সূচক মাথা ঝাঁকিয়ে বলে,
নিখিল
ভালো আছো তো? এখন আর রাস্তা পার হতে ভয় নেই তো?
কি সুন্দর অমায়িক কথার ধরন, আরও একবার হোঁচট খায় Arú.
তিথি
নিখিল ভাই কিছু জিজ্ঞেস করছে Arú, উত্তর দে৷
তিথির ধাক্কায় সম্মতি ফিরে পেলো Arú. তারপর হ্যা না দুদিকেই মাথা নাড়াতে থাকে, আসলে কি করবে কি বলবে ও কিছুই ঠাহর করতে পারছে না, ওর অবস্থা দেখে নীলিমা, তিথি দুজনই অবাক৷ যে মেয়ে কাঠকাঠ কথার জবাব দিতে ছাড়েনা সে কিনা ভেজা বিড়ালের মতো আচরণ করছে।
জুনিয়ররা সঙ্কোচ বোধ করছে দেখে নিখিল আর দাড়ায় না, সকল কে বিদায় জানিয়ে তারাহুরো করে যায়গা ত্যাগ করে। নিখিল চলে যেতেই নীলিমা তেঁতিয়ে ওঠে,
নীলিমা
Stupid একটা, এটাই শেষ সুযোগ ছিল, নিখিল ভাই নিজে এসেছিল, আর তুই কি করলি? হাবলার মতো উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব, পশ্চিম মাথা ঝাঁকিয়ে গেলি?
নীলিমা
Arú জবাব দেয়না, এই মূহুর্তে কথা বলতে ইচ্ছে করছে না, মাথাটা ভনভন করে ঘুরছে, গলাটা নিম পাতার মতো তেঁতো হয়ে এসেছে। চারিদিক ফাঁকা ফাঁকা লাগছে। হয়তো BP fall করেছে।
𝗙𝗘𝗠𝗔𝗟𝗘 𝗟𝗘𝗔𝗗
ভাল্লাগছে না বাসায় যাবো, আমাকে একটা রিকশা ঠিক করে দেনা তিথি।
তিথি
চলে যাবি মানে attendance টা atleast দিয়ে যা।
নীলিমার কথায় Arú এর ভেতরের তেঁতো ভাবটা বেরিয়ে এলো, মাথাটা ঝাঁঝিয়ে উঠলো, Arú চটে গিয়ে বললো,
𝗙𝗘𝗠𝗔𝗟𝗘 𝗟𝗘𝗔𝗗
বলেছি তো বাসায় যাবো।
▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎
শরীর আর মনের একরাশ অসুখ নিয়ে টলতে টলতে ক্রীতিক কুঞ্জে এসে পৌঁছেছে Arú. বিশাল সদরদরজা ঝনঝন আওয়াজ করে খুলে ভেতরে ঢুকতেই আরও বিরক্ত হয়ে যায় ও। মামা, মামি আর একমাত্র মামাতো ভাই রেজওয়ান ওরফে রেজা এসেছে।
Arú আর অনুর জীবনের এতো এতো ঝামেলার মধ্যে উটকো ঝামেলা এই পরিবারটা। কথা নেই বার্তা নেই যখন তখন এসে হাজির। আসবে তো আসবে একটা না একটা ঝামেলা পাঁকিয়ে তারপর বিদেয় হবে।
আজমেরী শেখ যখন সুস্থ সবল ছিলেন তখন দিন রাত আগমন ঘটতো এদের, তিন বেলা free তে রাজকীয় খাবার আর মহলের নরম গদিতে আরাম আয়েশ করে একটানা দশদিনও কাটিয়ে দিতো। বাড়ি যাওয়ার নাম গন্ধ পর্যন্ত নিতো না। অরুর মামাতো ভাই রেজা এলাকার পাতি মাস্তান, যার দরুন তার ছেলে পেলেদের ও নিয়ে আসতো একমাত্র ফুফুর আলীসান বাড়িতে।
Arú আর অনু এসবে বেশ লজ্জিত হতো যত যাই হোক তাদের তো এভাবে আরেকজনার অন্ন ধ্বংস করার কোনো অধিকার নেই। একমাত্র ভাই, ভাবী বলে আজমেরী শেখ তেমন কিছুই বলতেন না। অনু, Arú একটু গাইগুই করলে ওদের কেও চোখ পাঁকাতেন আড়ালে।
সবকিছু এভাবেই চলছিল, কিন্তু আজমেরী হক একেবারে বিছানা সজ্জায় চলে গেলে মামা মামির আসল রূপ দেখতে পায় Arú রা। আপন বোনকে দেখা তো দুরে থাক গত একবছরে হাসপাতালের গন্ডি অবধি মারায়নি ওদের মামা, বরং দুদিন পরপর বউ ছেলেকে নিয়ে এবাড়িতে এসে অনুকে মানসিক অশান্তিতে ভুগিয়েছে দিনরাত। Arú আর অনু এসবে বেশ লজ্জিত হতো যত যাই হোক তাদের তো এভাবে আরেকজনার অন্ন ধ্বংস করার কোনো অধিকার নেই। একমাত্র ভাই, ভাবী বলে আজমেরী শেখ তেমন কিছুই বলতেন না। অনু, Arú একটু গাইগুই করলে ওদের কেও চোখ পাঁকাতেন আড়ালে।
সবকিছু এভাবেই চলছিল, কিন্তু আজমেরী হক একেবারে বিছানা সজ্জায় চলে গেলে মামা মামির আসল রূপ দেখতে পায় Arú রা। আপন বোনকে দেখা তো দুরে থাক গত একবছরে হাসপাতালের গন্ডি অবধি মারায়নি ওদের মামা, বরং দুদিন পরপর বউ ছেলেকে নিয়ে এবাড়িতে এসে অনুকে মানসিক অশান্তিতে ভুগিয়েছে দিনরাত।
তাদের কথা একটাই, বাবা নেই, মায়েরও ও guarantee নেই, আজবাদে কাল মায়ের কিছু হয়ে গেলে ওদের দু বোনের কি হবে? আজ বা কাল এ বাড়ির ছোট সাহেব ঠিকই ফিরবে, তখন তো দুই বোনের কোনো গতি থাকবে না, তাই এখনই যদি তার একমাত্র সুযোগ্যপুত্র রেজার সাথে অনুর বিয়েটা হয়ে যায় তাহলে একটা কুল তো হবে, আর যাই হোক নদীতে তো আর ভেসে যেতে হবে না।
Arú বুঝে পায়না এতোবড় দুনিয়া থাকতে ওরা নদীতে কেন ভেসে যাবে, কি অপরাধ ওদের? অনুর রাগের ঘট এমনিই পরিপূর্ণ, এসব শুনলে আরও বেশি মাথা খারাপ হয়ে যায়, চেচামেচি করে বাড়ি মাথায় তুলে ফেলে সে, বিপরীতে মামির গা জালানো কথাতো আছেই। এককথায় এরা বাড়িতে পা রাখা মানেই ঝামেলা আর অশান্তি। Arú হলরুমের চারদিকে চোখ বুলায়, অনু কোথাও নেই,
𝗙𝗘𝗠𝗔𝗟𝗘 𝗟𝗘𝗔𝗗
তারমানে আপা এখনো হসপিটালে যাক ভালোই হলো।
ওর মামি dining table এ বসে আঙুর চিবুচ্ছে, রেজা কাঁউচে বসে পায়ে পা তুলে TV দেখছে। মামা আপাতত আসেপাশে নেই। অরু সবটাই দেখলো, তারপর না দেখার ভান করে দোতলায় পা বাড়ালো। দুটো সিঁড়ি মারাতেই পেছন থেকে ডাক পরলো মামির,
জাহানারা
কিরে দেখলি আমরা এখানে বসে আছি তাও ঢ্যাং ঢ্যাং করে উপরে চলে যাচ্ছিস। মামিকে চোখে পরেনা নাকি? আর আমার বউমা কোথায়?
Arú চোখ খিঁচে বন্ধ করে নিলো, এটারই ভয় পাচ্ছিলো ও। অনেক প্রশ্ন করেছে মামি, এক কথায় উত্তর দিতে হবে কি বলা যায়?
𝗙𝗘𝗠𝗔𝗟𝗘 𝗟𝗘𝗔𝗗
মাথা ব্যাথা করছে মামি, একটু ঘুমাবো, আর আপা হসপিটালে মায়ের কাছে।
জাহানারা
করেনে, করেনে, আরাম আয়েশ যা পারিস করেনে, আজ বাদে কাল বাড়ির মালিক ফিরলে তোদের তো ঘার ধরে বের করে দেবে, অনুটাকে কতোবার বুঝিয়েছি এ কথা, কতোবার বলেছি আমার রেজার সাথে বিয়েটা দিয়ে দেই, কিন্তু মেয়েটা বড্ড বেয়াদব হয়েছে, বড়দের মুখে মুখে তর্ক করে। বাবা মায়ের শাসন না থাকলে এই হয়।
মামির কথায় Arú এর নেতিয়ে পরা রাগটা আবারও তরতর করে ঝাঁঝিয়ে উঠলো। তীক্ষ্ণ সুচেঁর মতো কথা গুলো গিয়ে শরীরে বিধলো, ও পেছনে না ঘুরেই বললো,
𝗙𝗘𝗠𝗔𝗟𝗘 𝗟𝗘𝗔𝗗
তুমি যে নরম চেয়ারে বসে আঙুর চিবুচ্ছো, ওটাও কিন্তু এবাড়ির ছোট সাহেবের টাকা দিয়েই কেনা মামি। তাছাড়া জামশেদ জায়ান চৌধুরীর অবর্তমানে আমার মা-ই কিন্তু JK company এর chairman.
ওর কথায় একটা তাছ্যিল্যের হাসি খেলে গেলো Arú এর মামির মুখে, মনে মনে বললেন, এইটুকুনি মেয়ে ভালোই খই ফুটেছে মুখে। তারপর শত্রুকে পাল্টা তীর নিক্ষেপ করার মতো করে বললেন,
জাহানারা
হতে পারে তোর মায়ের অধিকার আছে, কিন্তু তোদের দুই বোনের তো কোনো অধিকার নেই, তোরা হলি কচুরিপানা। তাছারা তোদের মায়ের আর কদিন, বড় জোর হলে ছয়মাস।
𝗙𝗘𝗠𝗔𝗟𝗘 𝗟𝗘𝗔𝗗
মামি, অনেক বেশি বেশি বলে ফেলছো এবার, আমাদের মায়ের কিচ্ছু হবেনা। মাকে আমরা বিদেশে নিয়ে যাবো।
জাহানারা
তোর কি মনে হয়? Jayan Kritiķ চৌধুরী বা তার company তোদের নেওয়ার জন্য বসে আছে? শুনেছি তোর জন্যই নাকি বাড়ি ছাড়তে হয়েছিল তাকে।
মামির সাথে আর তর্কে পেরে উঠলো না Arú, দুশ্চিন্তাগ্রস্থ জটলা পাকানো মস্তিস্কটা আর চাপ নিচে পারছে না, হাত পা থরথর করে কাঁপছে। এই মূহুর্তে গলা থেকে একটা কথাও বের হচ্ছে না, মামি যে এতো নোংরা ভাবে ওকে আক্রমন করবে ভাবতে পারেনি Arú. ও সামনের দিকে আরও একবার চোখ বোলালো কয়েক জোড়া আক্রমণাত্মক চোখ। মনে হচ্ছে চোখ দিয়েই ওকে ভস্ম করে দেবে এরা। ও আর এক মূহুর্তেওও হল রুমে দাড়ালো না সিরি ডিঙিয়ে দোতলায় নিজের রুমে গিয়ে সপাটে দরজা আটকে দিলো।
.................................................
ভেতরটা ছিঁড়ে যাচ্ছে, অসহায়ত্ব চারিদিক জংলা আবরণের মতো ঘীরে ধরেছে। মামির তর্কের আঘাতে নিখিল ভাই চলে যাওয়ার কষ্টটা যেন নুন মরিচের ছিঁটা৷ আর ভালো লাগছে না, নীলিমা আর তিথির মতো জীবনটা স্বাভাবিক কেন হলো না ভাবছে Arú. কেন ওর জীবনে এতো দায়বদ্ধতা? কেন নিখিল ভাইয়ের প্রতি ভালো লাগাটা নিজের মাঝে খুব সহজে তুলে ধরতে পারলো না ও? এটা কি শুধুই অন্তর্মুখী হওয়ার দরুন, নাকি পরিবারের টানাপোড়েন আর দায়বদ্ধতা। নিখিলের চলে যাওয়া ভাবতে ভাবতে Arú এর মনে পরে যায় নিখিলের সাথে প্রথম দিনের সাক্ষাৎের কথা৷
তখনই ছিল ভালোলাগার শুরু। Arú বুঝেছিল এই লোকের versity তে বিশাল জনপ্রিয়তা। তারপর থেকে শুরু হয় Arú এর লুকিয়ে লুকিয়ে পর্যবেক্ষন, উদাসীন দুপুরে, কিংবা মরচে যাওয়া বিকালে campus এর এথায় সেথায় তাকেই খুজে বেড়াতো চোখ দুটো। এক নজর দেখা হয়ে গেলে খুশিতে পুলকিত হতো মনটা, ঝিলিক দিয়ে উঠলো মুখের কোনে মিষ্টি হাসি। যা এখনো চলমান৷
কখনো সামনে দাড়িয়ে কথা বলা হয়নি, Arú এও জানেনা নিখিল তার নামটা জানলো কি করে? তবে নিখিলের biodata সবই Arú এর জানা বলতে গেলে মুখস্থ। কিন্তু আফসোস এখন এসব কোনো কাজেই আসবে না, নিখিল ভাই চলে যাবে, হাজার কিলোমিটার দুরে হবে তার ঠাঁই, science lab এর chemical আর experiment এর মাঝে Aurorá নামটাই হয়তো ভুলে যাবে ওর সবচেয়ে প্রিয় নিখিল ভাই আর কখনো দেখা হবে কিনা তারও guarantee নেই। ভাবতেই চোখের কার্নিশ বেয়ে তপ্ত নোনা জল গড়িয়ে পরে Arú এর।
বোকা Arú তখনও জানতো না ওর জন্য কেউ এর থেকেও বিষাক্ত ভালোবাসা নিয়ে দিনের পর দিন অপেক্ষার প্রহর গুনছে।
▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎
■...At San Francisco ...■
সুন্দর টকটকে maple গাছের ফাঁক ফোকরে উচ্ছ্বাসিত জনতার ভীর যেন উপচে পড়ছে। তারা অন্যকিছু দেখার জন্য অধীর আগ্রহে সামনের রাস্তায় তাকিয়ে হাত নেড়ে যাচ্ছে নির্বিগ্নে সেই সাথে তাদের প্রবল উচ্ছ্বাসের বহিঃপ্রকাশ ঘটছে একই সুরে হইহই করে ওঠা প্রতিধ্বনিতে। ছেলে, বুড়ো যুবক যুবতী সবাই তাতে সামিল। দেখে মনে হচ্ছে তারা কোন performance কিংবা প্রতিযোগিতা দেখার জন্য জমায়েত হয়েছে। শুধু যে এইটুকুনি যায়গা ধরে মানুষের ভীর এমনটা নয়, লোকালয় ছাড়িয়ে San Francisco শহরের Golden Gate bridge পেরিয়ে প্রশান্ত মহাসাগর আর পাহাড়ের মধ্যবর্তী সরু আঁকাবাঁকা রাস্তাটা যতদূর অবধি চোখে পরে, ঠিক ততোদূর পর্যন্তই উচ্ছ্বসিত মানুষের সমাগম।
ঠিক তখনই, হুট করে একদম হুট করেই বেশ কয়েকটা bike ভোঁ ভোঁ আওয়াজ করে তরিৎ গতিতে রাস্তা অতিক্রম করে চলে গেলো। bike গুলো রাস্তা cross করতেই সবাই JĶ JĶ বলে চেঁচিয়ে উঠলো। সবার cheer up আর উচ্ছ্বাস দেখে মনে হচ্ছে এখানে bike riding competition হচ্ছে। আবারও দ্বিতীয় বারের মতো হাওয়ার গতিতে ছুটে আসা bike গুলো রাস্তা cross করে চলে যায়, তৎক্ষনাৎ সবার মুখে মুখে আবারও সেই JĶ নামের হিরিক পরে যায়।
টানা তিনবার একই ভাবে ride শেষে চারবারের সময় শেষ হলো competition. পরপর সাতটা bike এসে একই যায়গায় থামলো। সবার আগে যে (KTM 390 Adventure) bike টা পৌঁছেছে ওটাই JĶ ride করছে। কারন চারদিক থেকে ভেসে আসা JĶ নামের জয়জয়কার আর আনন্দ উচ্ছ্বাসই তার জানান দিয়ে যাচ্ছে।
তবে JĶ নামক লোকটা একটু অন্যরকম এতো এতো cheer up এও কোনোরূপ হেলদোল নেই তার, খুবই স্বাভাবিক মুখভঙ্গি, champion হয়েও খুশির লেসমাত্র নেই তার মুখে। অথচ runner up হওয়া biker টা খুশিতে ফেটে যাচ্ছে। সেই খুশি তার মুখে চোখে জোয়ারের জলের ন্যায় উপচে পরছে৷
JĶ helmet খুলে উরুর উপরে সেটাকে সটান বসিয়ে দেয়, helmet খুলতেই বেরিয়ে আসে তার stylish ঘাড় ছুঁইছুঁই লম্বা চুল গুলো। ঘার অবধি চুলে তাকে gentleman লাগছে না মোটেই বরং stylist superstar বললে হয়তো মানানসই হবে বাক্যটা। মনে হচ্ছে brand new bike এর কয়েকদফা shoot করে মাত্রই থেমেছে সে। ডানহাত দিয়ে বেখেয়ালে চুলগুলোকে back-brush করতে করতেই অন্য হাতে পরে থাকা apple watch টায় একনজর চোখ বুলিয়ে নিয়ে আবারও helmet টা পরে নিলো সে।
ওদিকে champion পুরস্কার বিতরণের জন্য stage এ তাকে বারবার ডাকা হচ্ছে। JĶ helmet পরেই সেদিকে একবার চাইলো। আশ্চর্য্য সবাই ডাকছে তবুও কেমন বেখেয়ালি ভঙ্গিমা তার, শেষমেশ কর্তৃপক্ষের একজন তারকাছে এগিয়ে আসতেই JĶ বলে,
তারপর কাউকে call করতেই কয়েক মিনিটের মধ্যে একটা কালো গাড়ি এসে থামলো ওখানে, গাড়ি থেকে formal coat পরিহিত একজন নামতেই, JĶ লোকটাকে উদ্দেশ্য করে বললো,
𝗠𝗔𝗟𝗘 𝗟𝗘𝗔𝗗
Look he is my assistant প্রত্যয় এহসান, give him the prize money.
লোকটা বিরক্তিতে ভ্রু কুঁচকায়, "Are you kidding me?"
𝗠𝗔𝗟𝗘 𝗟𝗘𝗔𝗗
No, I'm serious.
"Then why did you attend the game? And risked your life?" লোকটার কথায় বিরক্তির ছাপ স্পষ্ট।
JĶ তীর্যক হাসলো, কাঁধ দুটো সামান্য উপরে তুলে ভাবলেশহীন মুখে বললো,
𝗠𝗔𝗟𝗘 𝗟𝗘𝗔𝗗
You know, riding is thrilling and dangerous. And I love danger a lot.
শান্ত এবং স্থীর কন্ঠস্বর, তবে শরীরে কাঁপন ধরিয়ে দেবার মতোই ভয়ানক কথার টোন। শেষ কথাটা বলে, চোখে বিশালাকৃতির sunglass চড়িয়ে, শাঁই শাঁই করে নিজের (KTM 390 Adventure) bike নিয়ে পাহাড়ি রাস্তার বাঁকে মূহুর্তেই হারিয়ে গেলো JĶ. সবার দৃষ্টি এখনো সেদিকেই স্থীর। কর্তৃপক্ষের লোকটা বিরক্ত হলো, তবে চটে গেলোনা, এই ছেলে প্রতি বছর একটা না ঝামেলা পাঁকাবেই এটা তার বোধগম্য হয়ে গিয়েছে এতোদিনে, হয় কোনো প্রতিদন্দ্বিকে ইচ্ছে মতো পেটাবে, নয়তো riding এর মাঝ পথেই bike ঘুড়িয়ে নিয়ে চলে যাবে, আর না হলে prize giving এ এসে ঝামেলা পাঁকাবে। শুধু popularity আর audience demand এ-ই সারা বছর ঘুরে ঘুরে রাজি করানো হয় তাকে, নয়তো এমন আধপাগল, রাগচটা ছেলেকে জীবনেও competition এ আনতেন না তিনি। বাপের বয়সই হোক কিংবা দাদার কারও কথার দু পয়সা সম্মান পর্যন্ত দেয়না এই ছেলে।
JĶ দেখতে একেবারেই অন্যরকম, টকেটকে গৌড় বর্ন, শরীরের গঠন, চেহারা সব কিছুতে british দের ছাপ স্পষ্ট, অথচ গোল ভাসমান কালো মনি যুক্ত চোখদুটো দেখলে যে কেউ বলবে asian কোনো দেশের, কোনো এক সম্ভ্রান্ত গোত্রের উত্তরাধিকার সে, atleast attitude তো তাই বলে। JĶ আসলে british নয়, বরং American citizenship ধারী আদ্যপান্ত বাঙালি পুরুষ। তাহলে এই ছেলের চেহারায় এতোটা ভীনদেশী ছাপ কেন?
▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎
টানা দুদিন হতে চললো মামিরা বিদেয় হয়েছে। Arú জানতো অনু বাড়িতে ফিরলেই ঝামেলা শুরু হবে, আর হয়েছেও সেটাই। মামির গা জালানো কথা Arú চুপচাপ মেনে নিলেও অনু খালি মুখে সহ্য করতে পারে না মোটেই, কারণ আর যাই হোক মাকে হাসপাতালের এক কামরার শুয়িয়ে রেখে তার পক্ষে বিয়ের পিঁড়িতে বসা সম্ভব নয়, রেজার মতো পাতি মাস্তানের সাথে তো নয়-ই।
মামিকে এসব মুখের উপর বলে দেওয়া মানে ভয়াবহ ঝড়ের পূর্বাভাস, আর তাই হলো কথায় কথায় গমগমে হয়ে উঠলো পুরো মহল, একপর্যায়ে কথা কাটাকাটি থেকে শুরু হয়ে গেলো বিশাল তর্ক। অনুর মেজাজ সর্বক্ষনই তুঙ্গে থাকে, এই মূহুর্তে মামির কথার আঘাত তার মধ্যে চরম বিরক্তি আর উত্তেজনার সৃষ্টি করলো, শরীরের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ছড়িয়ে পরলো অযাচিত ক্ষোভ আর রাগ, রাগের মাথায় hallroom এর কাঁচের জিনিস গুলো একটা একটা করে আঁছার মেরে ভাঙতে লাগলো সে।
হলরুমে ঝনঝন করে কাঁচ ভাঙার আওয়াজ শুনে Arú বাইরে বেরিয়ে এলো, দেখলো তার ভদ্র, শান্ত আর নরম মনের আপার সবচেয়ে ক্ষুব্ধ রূপ। ওর এমন রাগ দেখে মামি যে খানিকটা ভরকে যায়নি এমন নয়, তবে সেও দমে যাওয়ার পাত্রি নন, তার ক্ষিপ্ত মুখশ্রী দেখে মনে হচ্ছে এর শেষ দেখেই ছারবেন তিনি। অবশেষে পরিস্থিতি সামাল দিতে, রেজা নিজের মাকে নিয়ে তৎক্ষনাৎ ক্রীতিক কুঞ্জ থেকে বিদায় নেয়।
অনু
আর কখনো আসবেনা তোমরা...
ওরা চলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অনু গিয়ে ঝনাৎ করে মহলের সদর দরজা আটকে দেয়,তারপর নিজের room এ ঢুকে কক্ষ বন্ধী করে নয় নিজেকেও। Arú দৌড়ে যায় বোনকে আটকানোর জন্য, তবে সেটা বড্ড দেরি হয়ে যায়, তার আগেই সপাটে দরজার খিল আটকে দেয় অনু। Arú জানে তার আপা আজ room থেকে বের হবে না, Arú ডাকতে ডাকতে বেহুশ হয়ে গেলেও না। তবু ও কিছুক্ষন ধরে ডাকাডাকি করে ক্ষান্ত হয়ে ফিরে যায় Arú. সে রাতে দু বোনের কারোরই আর খাওয়া হলো না।
.................................................
পরেরদিন সকালে নিজ হাতে নাস্তা, মায়ের জন্য soup সব কিছু বানিয়ে Arú আবারও কড়া নারলো অনুর দরজায়। এবার অনু দরজা খুললো, পড়নে স্যুতি চুড়িদার হাতে ব্যাগ, লম্বা চুল গুলোতে এটে আছে সুন্দর বেনি। দেখেই বোঝা যাচ্ছে হাসপাতালে যাওয়ার জন্য একেবারে তৈরি হয়েই বেরিয়েছে সে। আপাকে পরিপাটি হয়ে বেরোতে দেখে বিমূর্ষ চোখ দুটো খুশিতে টইটুম্বুর হলো Arú এর। অনুকে প্রশ্ন করার কোনো অবকাশ না দিয়েই Arú একেরপর এক বলতে লাগলো,
𝗙𝗘𝗠𝗔𝗟𝗘 𝗟𝗘𝗔𝗗
টেবিলে নাস্তা ready, মায়ের soup hotpot এ ভরে রেখেছি, আর email ও পাঠিয়ে দিয়েছি। চল একসাথে খাবো৷
কথা শেষ করে Arú সামনে হাঁটা ধরতেই, ওর হাত টেনে ধরে ওকে বুকে জড়িয়ে নেয় অনু। আপার রাগ কমেছে ব্যাপারটা বুঝতে পেরে, খুশিতে পুলকিত হয়ে শক্ত হাতে বোনের গলা জড়িয়ে ধরে Arú নিজেও।
𝗙𝗘𝗠𝗔𝗟𝗘 𝗟𝗘𝗔𝗗
আপা তুই কেন বদলে গেলি বলতো, কাল তোর রাগ দেখে আমি নিজেও ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম।
অনু
বিশ্বাস কর আমি একটুও বদলাইনি, স্বজন রূপী কাল সাপ গুলোকে বের করার জন্যই একটু বেশিবেশি করেছি, নইলে কতদিন পরে পরে আমাদের মাথা খেতো কে জানে?
𝗙𝗘𝗠𝗔𝗟𝗘 𝗟𝗘𝗔𝗗
তোর কি বুদ্ধি আপা, genius.
অনু
হয়েছে, কাল থেকে কিছুই খাইনি, চল নাস্তা খাবো, নয়তো মায়ের কাছে যেতে late হয়ে যাবে।
▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎
আজ শুক্রবার আপা একটু দেরি করেই হাসপাতালে যাবে আজ, Arú রাতেই বলে রেখেছিল যে সে-ও মাকে দেখতে যাবে। তাই খুব সকালে উঠেই email এর কাজ সেরে ফেলছে ও। তারপর একটা লম্বা shower নিয়ে ready হয়ে যখন phone হাতে নিলো দেখলো নীলিমার অনেকগুলো missed call ভাসছে। Arú তারাহুরো করে নীলিমাকে call back করলো। একবার ring হয়েছে কি হয়নি, তারমধ্যেই নীলিমা call তুললো।
𝗙𝗘𝗠𝗔𝗟𝗘 𝗟𝗘𝗔𝗗
📞 কি হয়েছে নীলিমা, এতো গুলো call দিলি, তুই ঠিক আছিস?
নীলিমা
📞 আমি ঠিকই আছি, তুই ঠিক আছিস কিনা সেটা বল, আচ্ছা তুই এমন কেন? দিন দুনিয়া ভুলে হিমালয় পর্বতের সন্ন্যাসীনি হয়ে যাস, নাকি মহাসমুদ্রে ডুব দিস কোনটা বল আমাকে?
𝗙𝗘𝗠𝗔𝗟𝗘 𝗟𝗘𝗔𝗗
📞 কি অদ্ভুত প্রশ্ন নীলিমা, আমি কেন এসব করতে যাবো? শোন আমার বিয়ে করে সংসার করার বহুত শখ সন্ন্যাসী টন্ন্যাসী এসব কথা ভুলেও বলবি না।
নীলিমা
📞 তাহলে phone কেন তুলিস না৷
𝗙𝗘𝗠𝗔𝗟𝗘 𝗟𝗘𝗔𝗗
📞 আরে phone silent mood এ ছিল।
নীলিমা
📞 তাহলে তুই কেন বসে আছিস এখনো? তুই ও silent mood এ চলে যা, আর তোর শখের নিখিল ভাই USA গিয়ে কোন এক সাদাচামড়ার মেয়েকে বিয়ে করে সুখে ঘর সংসার করুক।
𝗙𝗘𝗠𝗔𝗟𝗘 𝗟𝗘𝗔𝗗
📞 কি হয়েছে নীলিমা?
নীলিমা
📞 নিখিল ভাই আজই চলে যাচ্ছে, এতোক্ষণে হয়তো এয়ারপোর্টের কাছাকাছি চলেও গিয়েছে, এটাই তোর শেষ সুযোগ Arú.
নিখিল ভাইয়ের সাথে আর দেখা হবেনা, টোল পরা মন ভুলানো হাসিতে মাতোয়ারা হবেনা হৃদয়টা, নিখিল ভাইকে ছাড়া campus টাই তো মরে যাবে, হৃদয়টা হাড়হীম করা ব্যাথায় শক্ত হয়ে এসেছে Arú এর, এবার আর অজান্তে নয়, জেনে শুনেই ফু্ঁপিয়ে কেঁদে উঠলো ও। আর কান্নাকাটি করে সময় নস্ট করলো না, টেবিল থেকে purse নিয়ে দৌড়ে বেরিয়ে গেলো room থেকে।
অনু কেবলই খাবার দাবার hotpot এ ভরে ready হয়ে নেমেছে, তখনই দেখতে পায় হনহন করে কোথাও বেরিয়ে যাচ্ছে Arú.
অনু
কিরে কোথায় যাচ্ছিস, হাসপাতালে যাবিনা?
অরু জবাব দেয়না, এক প্রকার ছুটে বেরিয়ে যায় বাগানবিলাসে ঘেরা ক্রীতিক কুঞ্জ থেকে। অনুর অযাচিত মন আনমনে বলে,
অনু
Email টা পাঠালো কিনা কে যানে? Check করে দেখতে হবে।
.................................................
তবে এক অজানা শিকল Arú এর পা আকরে ধরে৷ আর Arú চাইলেও এই শিকল ভাঙতে পারবে না৷ তাই, একরাশ ভারাক্রান্ত মন আর নিজের করা বোকামিতে বিরক্ত হয়ে দ্রুত বাড়ি ফেরে Arú. সদর দরজা পার হতেই অনুর হাতের শক্ত চপটাঘাতে আবারও বিশ্বয়ে বিমূঢ় হয়ে ওঠে ওর মুখশ্রী।
𝗙𝗘𝗠𝗔𝗟𝗘 𝗟𝗘𝗔𝗗
কি করেছি আমি? আমার উপরেই কেন পৃথিবীর সবার এতো রাগ?
ভেঙে গুড়িয়ে যাওয়া আশাহীন হৃদয়ের ছটফটানি আর তীব্র যন্ত্রনা নিয়ে, যা হোক কেবলই ঘরের দুয়ারে পা রেখেছিল Arú. ঠিক তখনই অনাকাঙ্ক্ষিত চড়ের আঘাতে নিস্তব্ধ হয়ে আটকে যায় ওর পা দুটো, পাঁচ আঙুলের শক্ত ছাপ লেগে যায় নরম তুলতুলে আদুরে গালে। রক্ত জমে ফর্সা গালটা মূহুর্তেই ধারন করে কালচে বেগুনী রঙ।
Arú যে এতোটা ব্যাথা পেয়েছে, নিজ গালে হাত দিয়ে ছলছলে নয়নে এভাবে বোকাদের মতো তাকিয়ে আছে, তার কোনোটাতেই আপাতত ধ্যান নেই অনুর। রাগের তোপে এখনো শরীরটা রিরি করছে ওর। ইচ্ছে তো করছে অন্য গালে আরও একটা চড় বসিয়ে দিতে। অনু রাগে ফোসফাস করছে দেখে, Arú কেঁদেই ফেললো, ঠোঁট উল্টে অস্পষ্ট সুরে বললো,
𝗙𝗘𝗠𝗔𝗟𝗘 𝗟𝗘𝗔𝗗
কি করেছি আমি? এভাবে মারলি কেন? পৃথিবীতে কি মার খাওয়ার জন্যই জন্ম হয়েছে আমার?
অনু দাঁতে দাঁত পিষে বললো,
অনু
আমি ছাড়া আর কে মারে তোকে?
Arú বলতে চাইলো, কে আবার? এ বাড়ির ছোট কর্তা।দেশে থাকতে তো সকাল সন্ধ্যা গায়ে হাত তুলতো। যদিও সে বহু অতীতের কথা সে কারনে Arú সেসব ভাবতে চায়না, তাই মুখ ফুটে বললো,
𝗙𝗘𝗠𝗔𝗟𝗘 𝗟𝗘𝗔𝗗
অযথা কারন ছাড়া কেন মারবি আমাকে? কই কখনো তো কারন ছাড়া ভালোবাসিস না, সারাক্ষণ ঝাড়ির উপর রাখিস, আমিকি তোর সৎ বোন, আপা?
অনুর রাগের অঙ্গারে যেন একটু একটু ঘি ঢালছে এই মেয়ে, ক্রমশ মেজাজ খারাপটা বেড়েই যাচ্ছে, অনু কিরমিরিয়ে বললো,
অনু
এমদম পাঁকনামি করবি না Arú, আচ্ছা তোর কি মায়ের জন্য আদৌ কোনো চিন্তা আছে বলতো আমায়? নেই তাইনা?
𝗙𝗘𝗠𝗔𝗟𝗘 𝗟𝗘𝗔𝗗
এভাবে কেন বলছিস আপা?
অনু
বলছি কারণ তুই একটা হাঁদারাম, আর আমি কিনা তোর উপর ভরসা করে এতোবড় একটা দায়িত্ব দিয়েছি।
𝗙𝗘𝗠𝗔𝗟𝗘 𝗟𝗘𝗔𝗗
কি করেছি? Please খুলে বলবি৷
অনু এগিয়ে গিয়ে টেবিল থেকে laptop টা এনে ওর হাতে তুলে দেয়,
Laptop এর front screen এ email এর inbox ভাসছে সেই সাথে কতগুলো নতুন mail. সব গুলোই America থেকে এসেছে, যা দেখে Arú এর কান্নাভেজা চোখ দুটো খুশিতে চিকচিক করে ওঠে, ও কাঁদতে কাঁদতে বলে,
𝗙𝗘𝗠𝗔𝗟𝗘 𝗟𝗘𝗔𝗗
আপা company থেকে mail এসেছে, ওরা মাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য USA নিয়ে যাবে। এটাতো খুশির খবর।
অনু একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে, রাগ মিশ্রিত গলায় বলে,
অনু
হ্যা, এটা খুশির খবর কিন্তু এই mail টা আরও একমাস আগে এসেছে, ওরা visa, ticket সব পাঠিয়ে দিয়েছিলো, এই সপ্তাহেই flight. আজ কৌতুহল বসত আমি যদি email এর inbox না check করতাম তাহলে এই ticket আর visa আমাদের কোনো কাজেই আসতো না, কারন গত একটা বছর ধরে তুই শুধু robot এর মতো mail পাঠিয়ে গেছিস, কখনো inbox check করেও দেখিস নি। যদি আমি এটা আরও এক সপ্তাহ পরে check করতাম তাহলে আমাদের মায়ের চিকিৎসার কি হতো, বল আমাকে?
অনুর রুষ্ট চিৎকার শুনে কেঁপে ওঠে Arú. ওর এই মূহুর্তে কিছু বলার নেই। প্রথম প্রথম কয়েকমাস inbox check করেও কোন লাভ হয়নি, তাই ও ধরেই নিয়েছিল এই email এর কোনরূপ reply আর আসবে না, অতএব প্রতিদিন inbox দেখে দেখে আশাতীত হওয়ার কোন মানেই হয়না, এতে কষ্টটা দিগুণ হয়ে হৃদয়ে জেঁকে বসে। কিন্তু সকল চিন্তা ভাবনার উর্ধে গিয়ে এমন কিছু হবে সেটা অরু কল্পনাতেও ভাবেনি। ও আরও একবার সচকিত চোখে laptop এর mail টায় চোখ বোলালো, সকল নিয়ম নীতি হলফ করার শেষে একেবারে নিচে ছোট ছোট অক্ষরে লেখা, Mr. প্রত্যয় এহসান, CFO of JĶ Group & Industry.
𝗙𝗘𝗠𝗔𝗟𝗘 𝗟𝗘𝗔𝗗
প্রত্যয় এহসান, ইনি কে আপা?
অনু
হবে হয়তো company এর দায়িত্বরত কেউ।
Arú একে একে সবগুলো ticket check করলো, তার মধ্যে Aurorá Shéikh নামের ও একটা ticket রয়েছে। অনু পাশে এসে বলে,
অনু
আমি বুঝলাম না Arú তোর জন্যও ticket পাঠানো হয়েছে, তুই অবশ্য না গেলেও হতো।
𝗙𝗘𝗠𝗔𝗟𝗘 𝗟𝗘𝗔𝗗
কি বলছিস আপা? তোরা অতদূর চলে যাবি, আর আমি এই ফাঁকা ক্রীতিক কুঞ্জে একা একা থাকবো? ভুতেরা আমাকে আস্ত রাখবে বলে তোর মনে হয়? তুই এটা বলতে পারলি? আমি নির্ঘাত তোর সৎ বোন।
অনু
হয়েছে, drama বন্ধ কর, আমি কেন বলছি সেটা শুধু আমিই জানি।
অনু
যতই উন্নত চিকিৎসা হোকনা কেন, মায়ের কাছাকাছি সবসময়ই আমাকে থাকতে হবেরে, তাহলে বিদেশের বাড়ি তোকে আমি কার কাছে রেখে যাবো বল? তার উপর Kritiķ ভাইয়া মানুষটা সুবিধার না।
Arú মৃদু হেসে অনুকে আস্বাস দিয়ে বলে,
𝗙𝗘𝗠𝗔𝗟𝗘 𝗟𝗘𝗔𝗗
আমি কি আর ছোট আছিরে আপা? আমি ঠিক সব পরিস্থিতি manage করে নেবো তুই দেখিস, তাছাড়া এতোগুলো বছর পর তিনি নিশ্চয়ই আগের মতো নেই, হতে পারে এতোদিনে বিয়েশাদি করে আমাদের জন্য বিদেশিনী ভাবি ready করে রেখেছে।
অনু Arú কে জড়িয়ে ধরে ওর গালে আলতো চুমু খেয়ে বলে,
অনু
Sorry, সোনা। জানিস আমার অনেক খুশি লেগেছিল যখন mail গুলো দেখছিলাম, কিন্তু রাগটা তখনই হয়, যখন ভাবলাম এই mail একসপ্তাহ পর পেলে আমাদের টিকেট cancel হয়ে যেতো, আমাদের মাকে আরও ভুগতে হতো।
অরু মুখ কালো করে, মাথা নুইয়ে বলে,
𝗙𝗘𝗠𝗔𝗟𝗘 𝗟𝗘𝗔𝗗
তুই না আপা, আমিই sorry, আমিই তো খামখেয়ালি করে কিছুই check করতাম না। আমাকে ক্ষমা করে দে please.
অনু
হ্যা দেবো, তবে একটা শর্ত আছে।
অনু
এখন এই মূহুর্তে আমার সাথে market এ যাবি, অনেক প্রয়োজনীয় shopping করতে হবে, এই সপ্তাহেই flight.
Arú নিজের হাতের বাঁধন শক্ত করে, অনুর গলা জড়িয়ে ধরে খিলখিলিয়ে হেসে উঠে বলে। তারপর আনমনেই বলে,
𝗙𝗘𝗠𝗔𝗟𝗘 𝗟𝗘𝗔𝗗
[এবার আমি নিখিল ভাইকে ঠিক খুজে বের করবো।]
.................................................
আজ রোববার, আজমেরী শেখকে ইতিমধ্যে emergency flight এ তুলে দিয়ে এসেছে ওরা দুবোন, ওদের flight রাতে। আর কয়েক মূহুর্ত মাত্র তারপর এই মহল, বাগান বিলাশে ঘেরা বিশাল বাড়ি, বাড়ির পেছনের সুপারি বাগান, সামনের বিশাল গেইট সব কিছু মানবশূন্য হয়ে পরবে। প্রিয় ক্যাম্পাস, প্রিয় বান্ধবী, সবাইকে ছেড়ে বহুদূরে পারি জমাবে Arú. অচেনা দেশে, সব অচেনা মানুষের ভীরে সাদামাটা বাঙালী Arú এর জন্য কি অপেক্ষা করছে কে জানে?
কেবল ভরসা একটাই মায়ের সুস্থতা, আর মন গহীনের অযাচিত এক অদম্য ইচ্ছা, নিখিল ভাইকে খুঁজে বের করা। Arú জানে কাজটা এতোটাও সহজ নয়, তবে ও চেষ্টা করবে। পৃথিবীটা তো গোলকার, তার উপর একই দেশে থাকবে ওরা, internet এর যুগে অতোটাও কষ্টকর হবে না ব্যাপারটা, ভাবতেই বিষন্ন মুখে একচিলতে হাসি ফুটে উঠলো Arú এর।
Comments