পর্ব____৩

শালুক_ফুলের_লাজ_নাই(০৩)

শালুক আজকে নিজের রুমেই ঘুমাবে,শাপলার সাথে ঘুমাতে গেলে তার চুল কেটে ফেলার খবরটা জানাজানি হয়ে যেতে এক মুহুর্ত ও সময় লাগবে না।সবচেয়ে বড় কথা শালুককে নিয়ে একটা ছোট খাটো দরবার বসবে।বাড়িতে মেয়েদের মধ্যে শুধুমাত্র শালুকের চুলই ঘন,লম্বা,সিল্কি।অন্যদের চুল কোঁকড়ানো অথবা ছোট অথবা পাতলা।এজন্য শালুকের চুলে শালুক নিজেই হাত দিতে পারে না। শালুকের মনে হয় চুলগুলো শুধু তার মাথায় রয়েছে,এমনিতে এই চুলের মালিক এই বাড়ির সবাই।

বড় , মেজোোমেজো চাচী সপ্তাহে দুই তিন দিন ধরে চুলে বিভিন্ন হেয়ার প্যাক লাগিয়ে দেয় শালুককে।

নিজের রুমের দরজা লাগাতেই শাপলা এসে দরজায় দুমদাম ধাক্কাতে লাগলো।

শালুক সবেমাত্র মাথা থেকে ওড়না সরিয়েছে,দরজায় দুপদাপ শুনে আবারও ওড়না ভালো করে মাথায় পেঁচিয়ে শালুক উঠে গিয়ে দরজা খুললো।

ফ্যাকাসে মুখে শাপলা দাঁড়িয়ে আছে দরজার সামনে। শালুক জিজ্ঞেস করার আগে শাপলাই বললো,”আদুর বিদেশিনী আমার রুমে এসে হাজির,আমার সাথে ঘুমাবে না-কি!আমার কেমন জানি লাগতেছে শালুক।তুই ও আয় আমার রুমে। এমনিতেই তো তুই একা ঘুমাতে পারিস না আজ কি মনে করে নিজের রুমে এলি।”

শালুক একটু ভাব নিয়ে বললো,”আমি কি আজীবন ছোট-ই থাকবো না-কি? একা ঘুমানোর অভ্যাস করছি।আর তোর রুমে তিনজন মিলে গাদাগাদি করে ঘুমাতে পারবো না আপা।ফার্দিকারে দেখলে কখন কি করে ফেলি আমার মাথার ঠিক নেই।আমি কসম করেছি এটা নিয়ে। ”

শাপলা চোখ গোল করে জিজ্ঞেস করলো, “কিসের কসম?”

শালুক মাথা নেড়ে বলে, “এই দুই তলার কসম,একদিন চরম প্রতিশোধ নিবো।ওই আদনান তার ফার্দিকাকে কি বলেছে জানিস,আমার না-কি ঘুমের ঘোরে হাটার অভ্যাস,মানুষের গলা টিপে ধরার অভ্যাস,তাই আমার সাথে যাতে না ঘুমায়।তখনই আমি কসম করেছি,যদি না করি তবে এই দুইতলা ভূমিকম্পে ভেঙে খানখান হয়ে যাবে আদনাইন্না আর ওর পিরিতির ফার্দিকাকে নিয়ে।”

শাপলা বোনের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে বললো, “তুই থাকবি কোথায় তখন?”

শালুক ফিক করে হেসে বললো, “আমাকে এতো বোকা ভেবেছিস আপা?আমি কি সেটা না ভেবেই কসম করেছি না-কি? আমি ছাদে আমার চিলেকোঠার ঘরে থাকবো।ভেঙ্গে গেলে দুইতলা যাবে,ওটা তো ভাঙ্গবে না।ওটার কসম তো করি নি।”

শাপলা হতাশ হয়ে বললো, “তুই যদি জানতি শালুক তুই কি পরিমাণ বোকা,তবে এই কসম করতি না।”

শালুক রেগে গিয়ে বললো, “যা ভাগ এখান থেকে। আসছে আমার বুদ্ধিজীবি। ”

শাপলা হতাশ হয়ে চলে গেলো নিজের রুমের দিকে।

দরজা বন্ধ করে শালুক বিছানায় পিঠ লাগাতেই রাজ্যের ক্লান্তি এসে ভর করলো শালুককে।নিজেকে কেমন নিস্তেজ,নিষ্প্রাণ লাগছে শালুকের কাছে।একটা মানুষের প্রতারণায় শালুক এভাবে গুড়িয়ে যাবে কখনো কি ভেবেছে সে?

অসাড় হয়ে যাওয়া দেহটা যখন ঘুমের রাজ্যে প্রবেশ করছে সেই মুহুর্তে শালুকের মাথায় আসলো সে আসলেই বোকা।

তা না হলে সে কিভাবে বড় চাচীর কাছে গিয়েছিলো তখন চুল বাঁধার জন্য?কেউ যাতে ওর চুল কেটে ফেলার ব্যাপারটা ধরতে না পারে তার জন্য ঘোমটা দিয়ে রাখছে সকাল থেকে। একা ঘুমাতে ভয় পাওয়ার পরেও নিজের রুমে একা ঘুমাতে এসেছে। অথচ সে কি-না এক মুহুর্তে ভুলে গেছে মাথার চুলের কথা।

নিজেকে নিজে জিজ্ঞেস করলো শালুক,”কবে তোর মাথায় বুদ্ধি হবে শালুক?”

জবাব এলো না।

ঘুমাতে গিয়ে শালুকের হঠাৎ করেই মনে হলো জানালার ওপাশে কে যেনো দাঁড়িয়ে আছে। আড়চোখে শালুক সেদিকে তাকাতেই যেনো কিছু একটা সরে গেলো। ভয়ে আতঙ্কে জমে গেলো শালুক।

একা ঘুমাতে গেলেই শালুকের এরকম হয়।সবসময় মনে হয় কেউ একজন আছে, তাকে আড়াল থেকে দেখছে।

হঠাৎ করেই শালুক যেনো নিশ্বাস ফেলার শব্দ ফেলো বিছানার নিচে থেকে।

পায়ের কাছ থেকে কাঁথা টেনে নিয়ে কাঁথা মুড়ি দিয়ে শুয়ে পড়লো শালুক।মনে মনে একদমে আয়াতুল কুরসি পড়ে যাচ্ছে।

ঝুম বৃষ্টি নিয়ে সকাল শুরু হলো। জানালার গ্লাসে বৃষ্টির ঝাপটা এসে বারবার আঘাত হানছে।শালুক চোখ খুলে তাকিয়ে দেখে চারদিক কেমন অন্ধকার হয়ে আছে।হতভম্ব হয়ে গেলো শালুক!

এক ঘুমে সে এক রাত এক দিন কাটিয়ে ফেলেছে!

এমন ঘুম ঘুমিয়েছে যে সন্ধ্যা নেমে গেছে অথচ শালুক টের পায় নি।

অবাক হলো শালুক আবার কিছুটা। কেউ তাকে ডাকলো না কেনো?বিশেষ করে ধ্রুব ভাই বাড়িতে আসার সাথে সাথেই তো মা গলাটাকে একটা ছোটখাটো হ্যান্ডমাইকের রূপ দিয়ে সবার কান ফাটিয়ে ডাকাডাকি শুরু করে। যেনো ধ্রুব কোনো দেশের প্রাইম মিনিস্টার, তাকে দেখতে যেতেই হবে সবার।

আজ এরকম করলো না কেনো তবে মা? নাকি তাও শালুকের কানে যায় নি!

ব্রাশ করে ফ্রেশ হয়ে শালুক পা টিপে টিপে বের হলো রুম থেকে।

তারপর শাপলার রুমে গিয়ে বললো, “আপা, আমাকে কেউ ডাকে নি কেনো?সন্ধ্যা হয়ে গেছে অথচ কেউ একবার ডাকলো না।আমি যদি মরে যেতাম তবে কেউ জানতি ও না তোরা।”

শাপলা বিরক্ত হয়ে বললো, “কানের কাছ থেকে যা তো শালুক,গাধার মতো কথা বলছিস।এমনিতেই রাতভর ওই আশার আর আদনান ভাইয়ের কাহিনি শুনতে শুনতে কান ব্যথা হয়ে গেছে,ঘুমাতে পারি নি সারারাত ধরে। এখন ঘুমাতে দে।

কষ্ট করে একবার গিয়ে দেখ ধ্রুব ভাই আসার কতোদূর!

স্টেশনে কে গেছে তাকে আনতে? ”

শালুক চমকালো।ধ্রুব ভাই এখনো আসে নি?তারমানে এখনো সন্ধ্যা হয় নি।আর সে কি-না ভয় পেয়েছে এই ভেবে যে সন্ধ্যা হয়ে গেছে। আনন্দিত হয়ে শালুক নিচে নেমে এলো।

হাসনা রান্না ঘরে, সবার জন্য নাশতা বানানো হচ্ছে।বড় চাচী আর মেজো চাচী রুটি বানাচ্ছেন।ফুফু রুটি সেঁকছে।শালুকের মা চুলায় আলু,গাজর,পেঁপে দিয়ে ভাজি করছে।

মতির মা মাছ কুটছেন।

শালুক নাক সিঁটকালো।এইসব হাবিজাবি ভাজাভুজি খেতে শালুকের একেবারে বিরক্ত লাগে।

মেজো চাচা চোরের মতো মুখ করে বসে আছে সোফায়।শালুকের ভীষণ মায়া হলো চাচার জন্য।এই লোকটা কতো বছর ধরে ছেলের মুখে বাবা ডাক শোনে না।বাবা ছেলে মুখোমুখি হন না।একসাথে বসে খান না।

শালুককে দেখে সেলিম সাহেব জিজ্ঞেস করলেন,”স্কুলে যাবি কখন?”

শালুক আকাশ থেকে পড়েছে যেনো স্কুলের কথা শুনে। বিস্মিত হয়ে বললো,”এই ঝড় বৃষ্টির মধ্যে তুমি আমাকে স্কুলে যেতে বলো চাচা?সামান্য লেখাপড়ার জন্য তো আর আমি আমার জীবন রিস্কে ফেলতে পারি না, তাই না?বেঁচে থাকার অধিকার আমার ও আছে।”

আদনান চায়ের কাপ নিয়ে আসতে আসতে বললো,”সেই সাথে পরীক্ষায় গোল্লা মারার অধিকার ও শালুকের আছে।”

শালুকের ভীষণ বিরক্তি লাগলো। মনে মনে বললো, “ফার্দিকার সামনে স্মার্ট হতে চাচ্ছো সে আমি ভালো করেই বুঝি।একদিন সবকিছুর শোধ নিবো।শুধু তোমার প্রতি একটা ভালোবাসাআছে বলে চুপ করে থাকি।”

বাহিরে রিকশার টুংটাং শব্দ হতেই সেলিম সাহেব উঠে দাঁড়িয়ে গেলেন।তারপর ব্যস্ত হয়ে উপরে চলে গেলেন।হাসনা বেগম চিৎকার করে বলতে লাগলেন,”আমার ধ্রুব বাবা আসছে রে,তোরা সব কোথায় গেলি।”

পাতলা একটা সাদা টি-শার্ট পরনে,ব্ল্যাক ট্রাউজার পরে ধ্রুব তখন আধ ভেজা হয়ে হাসনা বেগমের শাড়ির আঁচলে চুল মুছছে।সবাইকে সালাম দিয়ে এগিয়ে গেলো আদনানের দিকে।তারপর দুই ভাই কোলাকুলি করলো।

আদনান আশার দিকে তাকিয়ে বললো, “তোর হবু ভাবী,আশা।আর আশা,এই তোমার বড় দেবর ধ্রুব।”

আশা বিড়বিড় করে বললো, “হ্যান্ডসাম! ”

শাপলা ততক্ষণে সেজেগুজে হাজির হয়ে গেলো নিচে।ধ্রুবর পাশে দাঁড়িয়ে বললো, “কেমন আছো ধ্রুব ভাই?”

ধ্রুব মুচকি হেসে বললো, “ভালো আছি,তোরা সব কেমন আছিস?”

শাপলা গাল ফুলিয়ে বললো, “এতোদিনে মনে পড়লো? ”

কিছু না বলে ধ্রুব হাসলো।

শালুক ঘোমটা টেনে দিয়ে বসে রইলো শক্ত হয়ে। ধ্রুব কাঁধ থেকে ব্যাগ খুলে শালুকের দিকে ছুড়ে দিয়ে বললো, “ভাব বেড়ে গেছে না-কি তোর?সবাই আমার সাথে কথা বলছে আর তুই ভাব নিয়ে বসে আছিস এখানে?আমার ব্যাগটা রুমে নিয়ে রেখে আয়।ব্যাগের সব কাপড় চোপড় সুন্দর করে গুছিয়ে রাখবি আমার আলমারিতে। ভাঁজ যেনো না ভাঙে শালুক,আই রিপিট ভাঁজ যেনো না ভাঙে। তাহলে তোকে দিয়েই আয়রন করাবো মনে রাখিস।”

শাপলা বললো,”আমাকে দাও,আমি রেখে আসি।”

চোখ লাল করে ধ্রুব তাকালো শাপলার দিকে।তারপর বললো,”তোকে আমি বলেছি?”

শাপলা নিভে গেলো ধ্রুবর চোখ রাঙ্গানো দেখে।

ধ্রুবর রুমে গিয়ে সব কাপড় বের করে শালুক সব দলা মোচড়া করলো প্রথমে।সবগুলোর ভাঁজ নষ্ট হবার পর এলোমেলো করে সবকিছু আলমারিতে গাদাগাদি করে রাখলো।

ব্যাগের উপরের চেইন খুলতেই শালুক অবাক হলো। ভেতরে একটা শপিং ব্যাগে প্লাস্টিকের ফুলের বিভিন্ন রঙের কয়েকটা গাজরা,নানান ডিজাইনের হেয়ার ব্যান্ড।একটা চিরকুটে লিখা,”কেশবতীর জন্য।”

শালুক মুখ বাঁকিয়ে বললো, “তলে তলে টেম্পো চলে,আমরা বললেই হরতাল!”

নিচে আসতেই দেখে সবাই খেতে বসেছে। মেজো চাচা নেই শুধু।শালুক আসতেই ধ্রুব বললো,”তোর চাচাকে বল খেয়ে যেতে,আমি পরে ছোট চাচীর সাথে খাবো।উনি আর ওনার স্ত্রী যেনো খেয়ে আমার সামনে থেকে বিদায় হয়।”

শালুকের বড় চাচা আজাদ সাহেব বললেন,”ধ্রুব বাবা,এখনো এসব ধরে বসে থেকে কি লাভ?শুধুশুধু বাবা ছেলের মধ্যে… ”

আজাদ সাহেব কথা শেষ করতে পারলেন না।ধ্রুব কঠোর স্বরে বললো, “এই ব্যাপারে আমি কারো থেকে কোনো সুপারিশ শুনতে চাই না।”

আজাদ সাহেব থেমে গেলেন।শালুকের বাবা ফয়েজ আহমেদ একটা নিশ্বাস ফেলে খাওয়ায় মনোযোগ দিলেন।

ধ্রুব গিয়ে দাদার রুমে বসে রইলো। নাশতা শেষ করে ধ্রুবর দাদা রশিদ সাহেব নাতির পাশে এসে বসলেন।তারপর নরম স্বরে বললেন, “আমাকে মাফ করে দিস দাদাভাই। আমার জন্যই তোর শৈশব,কৈশোর সবকিছু এলোমেলো হয়ে গেছে। আমার জন্যই তুই বাবা মা হারা হলি।”

ধ্রুব হেসে বললো, “তোমার কোনো দোষ নেই দাদা।এসব ভেবে তুমি আপসেট হইও না।”

দাদার রুম থেকে বের হয়ে ধ্রুব ছাদের দিকে গেলো।ছাদের নিজের রুমে ঢুকে বেশ বড়সড় একটা ধাক্কা খেলো ধ্রুব।দেয়ালে দীপালি নামক মহিলার একটা ছবি ঝুলছে।

মুহুর্তেই ধ্রুব ক্রোধান্বিত হয়ে গেলো। ছবিটি নামিয়ে সোজা নিচতলায় গেলো। সবাই তখনো ডাইনিং টেবিলে বসে খাচ্ছে। আচমকা ধ্রুব ছবিটি আছড়ে ফেললো ফ্লোরে।মুহুর্তের মধ্যে শত খণ্ডবিখণ্ড হয়ে গেলো ফ্রেমের সব কাঁচ।কয়েকটা কাঁচ কুড়িয়ে নিয়ে ধ্রুব আবারও ভাঙ্গলো। ফলস্বরূপ নিজের দুই হাত কেটে গেলো কিছুটা।

চিৎকার করে ধ্রুব বললো, “এই কাজ কে করেছে?আমার অপছন্দ জেনেও কে এই কাজ আবারও করেছে ছোট চাচী?

এই ছবি আমার ঘরে কেনো লাগানো হলো?”

হাসনা নিজেও জানে না কে লাগিয়েছে।কিন্তু ধ্রুবকে এভাবে রাগতে দেখে বললেন,”বাবা মাথা গরম করিস না।আমি লাগিয়েছি বাবা।আমার ভুল হয়েছে। আর হবে না এরকম।”

ফোঁস ফোঁস করে নিশ্বাস ফেলে ধ্রুব বললো, “শুধু তুমি বলে আজ আমি থেমে গেলাম। এই কাজ আর করো না চাচী।নয়তো ধ্রুবকে চিরতরে হারিয়ে ফেলবে।এখন তো তুমি আছো বলে তোমার টানে ফিরে আসি,এরপর আমাকে আর খুঁজে পাবে না।”

তারপর হনহনিয়ে দোতলায় নিজের রুমে চলে গেলো ধ্রুব।

রান্নাঘরে দাঁড়িয়ে ফরিদা থরথর করে কাঁপছে। হাসনা তার দিকে তাকাতেই ফরিদা বললো, “আমার ভুল হয়ে গেছে আপা।ধ্রুবর বাবা মাঝরাতে ঘুম থেকে উঠে এই ছবির দিকে তাকিয়ে থাকে। বউ হয়ে আমি কিভাবে সহ্য করি বলেন যে আমার স্বামী তার প্রথম স্ত্রীর ছবি এভাবে লুকিয়ে দেখে?তাই ছবিটি আমি ধ্রুবর ছাদের ঘরে লাগিয়ে রেখেছি।ভেবেছি মায়ের ছবি দেখলে ধ্রুবর রাগ একটু হলেও কমবে।এখন দেখছি আমি ভুল ছিলাম।”

হাসনা কঠোর স্বরে বললো, “এরকম কাজ আর কখনো করতে যেও না আপা।আমাকে জিজ্ঞেস না করে আর কখনো এসব কাজ করবে না।”

শালুকের ভীষণ মায়া হলো ধ্রুব ভাইয়ের জন্য।একটা মানুষ মনের ভেতর কতো যন্ত্রণা লুকিয়ে রাখে তা আমরা বাহিরে থেকে কি একটুও বুঝতে পারি?

মা নেই, বাবা থেকেও নেই,একা জীবন যে কাটায় তার কষ্টের গভীরতা কে মাপতে পারে?

হাসনা শালুককে ডেকে বললো, “ধ্রুবর ঘরে ওর নাশতা নিয়ে দিয়ে আয় শালুক।”

নাশতার ট্রে হাতে নিতেই শালুকের রাগ হলো। সে খেয়েছে হাবিজাবি ভাজাভুজি দিয়ে অথচ ধ্রুব ভাইয়ের জন্য ঘন করে বানানো দুধ চা,পরোটা, কসা মাংস,ডিম ভাজা।

শালুক মায়ের দিকে একবার তাকিয়ে মনে মনে বললো, “এই যে আমার মা হয়ে আমার সাথে খাবার নিয়ে এই বাটপারি করলো মা,আমার কি কষ্ট কম হচ্ছে?সবাই ধ্রুব ভাইয়ের ব্যথা অনুভব করে,শালুকের ব্যথা কেউ বুঝে না।”

অভিশাপ দিলাম ধ্রুব ভাইকে,এই খাবার খাওয়ার পর তার পেট খারাপ করুক।যাতে বাথরুমেই তার থাকার ব্যবস্থা হয়।স্যালাইন ছাড়া আর কিছুই যাতে খেতে না পারে। ”

চলবে……

Episodes

Download

Like this story? Download the app to keep your reading history.
Download

Bonus

New users downloading the APP can read 10 episodes for free

Receive
NovelToon
Step Into A Different WORLD!
Download NovelToon APP on App Store and Google Play